Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ, আয় রোজগার বারো মাস

বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের এবং বীজ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত ভালো। আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ করে ফলন ও মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। আর এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানিও করা সম্ভব। আমাদের দেশে প্রায় সব মসলা ফসলের চাহিদা উৎপাদনের চেয়ে কম। তাই উন্নত পদ্ধতিতে উন্নত জাত ব্যবহার করে চাষ করলে ভালো বাজার মূল্য পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে তিনটি জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পেঁয়াজ চাষে অনেক সাফল্য নিয়ে এসেছে। জাতগুলো হচ্ছে বারি পেঁয়াজ-২, বারি পেঁয়াজ-৩ এবং বারি পেঁয়াজ-৫।


মাটি : পেঁয়াজের চাষ করতে সব রকম মাটি ব্যবহার হলেও সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত বেলে দোঁ-আশ বা পলিযুক্ত মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুব ভালো। প্রচুর দিনের আলো, সহনশীল তাপমাত্রা ও মাটিতে প্রয়োজনীয় রস থাকলে পেঁয়াজের ফলন খুব ভালো হয়। রবি পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ১৫-২৫০ সে. তাপমাত্রা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী। ছোট অবস্থায় যখন শেকড় ও পাতা বাড়তে থাকে তখন ১৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় ৯-১০ ঘণ্টা দিনের আলো থাকলে পেঁয়াজের বাল্ব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তীতে ১০-১২ ঘণ্টা দিনের আলো ও ২১ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রা এবং গড় আর্দ্রতা ৭০ শতাংশ থাকলে পেঁয়াজের কন্দ ভালোভাবে বাড়ে, বীজ গঠিত হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। মাটির পিএইচ ৫.৮ থেকে ৬.৫ হলে পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়।
 

বীজ শোধন : অন্যান্য ফসলের মতো প্রোভ্যাক্স/ভিটাভ্যাক্স/


ব্যাভিস্টিন এসব বীজের সাথে মিশিয়ে শোধন করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি কেজি বীজের জন্য ২ গ্রাম উপরোক্ত ওষুধ প্রয়োজন হয়। তবে উপরোক্ত ওষুধ না থাকলে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক দ্বারাও বীজ শোধন করা যায়।
বীজ হার ও বপন/রোপণ পদ্ধতি : হেক্টরে ৪-৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ প্রায় ৬০০-৭০০ গ্রাম বীজ প্রতি বিঘার জন্য প্রয়োজন হয়। পেঁয়াজ তিন পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। সরাসরি ক্ষেতে বীজ বুনে, শল্ক কন্দ রোপণ করে এবং চারা তৈরি করে তা রোপণের মাধ্যমে। খরিফ মৌসুমে উৎপাদনের জন্য চারা তৈরি করে মাঠে রোপণ করাই উত্তম।


বীজ বপন সময় : বাংলাদেশে রবি ও খরিপ উভয় মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করা সম্ভব। আর বারি পেঁয়াজ-২ এবং বারি পেঁয়াজ-৩ আগাম এবং নাবি চাষ করা যায়। আগাম চাষের জন্য মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বীজ বুনতে হয় এবং এপ্রিল-মে মাসে ৪০-৪৫ দিনের চারা রোপণ করতে হয়। নাবি চাষ করতে হলে মধ্য জুন পর্যন্ত বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। নাবি চাষের জন্য জুলাই থেকে আগস্ট মাসে বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। আর ৪০-৪৫ দিনের চারা মূল জমিতে রোপণ করতে হয়।

সার

মোট পরিমাণ

শেষ চাষের সময় প্রয়োগ

১ম কিস্তি (২০ দিন পর)

১ম কিস্তি (২০ দিন পর)

গোবর/কম্পোস্ট

 ৫ টন

সব

-

-

ইউরিয়া

১৫০-২০০ কেজি

-

৭৫-১০০ কেজি

৭৫-১০০ কেজি

টিএসপি

১৭৫-২০০ কেজি

সব

-

-

এমওপি

১৭৫ কেজি

১০০ কেজি

৩৭.৫ কেজি

৩৭.৫ কেজি


জমি তৈরি ও চারা রোপণ : রোপণের ৩-৪ সপ্তাহ পূর্বে হালকা গভীর অর্থাৎ ১৫-২০ সেন্টিমিটার করে ৪-৫টি চাষ  ও মই দিতে হবে। পেঁয়াজের শিকড় মাটিতে ৫-৭ সেন্টিমিটারের মধ্যে বেশি থাকে। উৎপন্ন চারা জমিতে রোপণ করলে কন্দ বড় হয় এবং ফলন বেশি হয়। পেঁয়াজের জন্য তৈরি জমিতে মাঝে মাঝে নালা রেখে ছোট ছোট বেডে ভাগ করা হয়। বেডগুলো ১ মিটার চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি উঁচু করে তৈরি করতে হবে। বেডে ৩৫-৪০ দিন বয়সের সুস্থ চারা, ১০-১৫ সেন্টিমিটার (সারি-সারি) দূরত্বে ও ৮-১০ সেন্টিমিটার (চারা-চারা) দূরে এবং ৩-৪ সেন্টিমিটার গভীর গর্তে ১টি করে রোপণ করতে হবে। কন্দ গঠন শুরু হওয়া চারা রোপণ করা যাবে না। চারা রোপণের পর সেচ দিতে হবে।


সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ (কেজি/হেক্টর) : মাটিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে চাষ করলে পেঁয়াজ বেশ বড় ও ভারী হয় এবং অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। মাটির অবস্থা ভেদে সারের মাত্রা নির্ভর করে। শেষ চাষের সময় সবটুকু গোবর বা কম্পোস্ট, টিএসপি ও ১০০ কেজি এমওপি সার জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হয়। বাকি এমওপি এবং ইউরিয়া সমান ভাগে ভাগ করে যথাক্রমে চারা রোপণের ২০ এবং ৪০ দিন পর দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।


ফসলের আন্তঃপরিচর্যা : পেঁয়াজের চারা রোপণের পর একটি প্লাবন সেচ অবশ্যই দিতে হবে। মাটিতে চটা বাঁধলে কন্দের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। মাটির জো আসার সাথে সাথে চটা ভেঙে দিতে হয় ও আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।
নিড়ানির সময় ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে গাছের গোড়া ঢেকে দিতে হবে। আর প্রয়োজনবোধে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

 


রোগ বালাই এবং পোকা মাকড় দমন : পেঁয়াজে পারপেল ব্লচ, গোড়া পচা রোগ হতে পারে। এসব দমনের জন্য রিডোমিল গোল্ড, ডায়থেন এম-৪৫, রোভরাল ৫০ ডব্লিউপি জাতীয় ওষুধ ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। পোকা মাকড়ের মধ্যে থ্রিপস এবং জাব পোকা মারাত্মক। এসব দমনের জন্য ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে।


ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ : পেঁয়াজের গাছ পরিপক্ব হলে এর গলার দিকের টিস্যু নরম হয়ে যায়। বারি পেঁয়াজ-২, ৩ ও ৫ এর চারা থেকে কন্দের পরিপক্বতা হওয়া পর্যন্ত আগাম চাষের ক্ষেত্রে মাত্র ৭০-৮০ দিন এবং নাবি চাষের ক্ষেত্রে ৯৫-১১০ দিন দরকার হয়। ফসল বাছাই ও গ্রেডিং করার পর বাঁশের মাচা, ঘরের সিলিং, প্লাস্টিক বা বাঁশের র‌্যাক অথবা ঘরের পাকা মেঝেতে শুষ্ক ও বায়ু চলাচল যুক্ত স্থানে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে হবে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে বিধায় ১-২ মাসের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না।


ফলন : ভালোভাবে সেচ ও সার প্রয়োগের মাধ্যমে চাষ করলে জাত ভেদে হেক্টরপ্রতি ১৩-২০ টন ফলন পাওয়া যায়। সরাসরি বীজ বপন করে চাষ করার চেয়ে পেঁয়াজের চারা রোপণ করলে ২০-২৫ শতাংশ ফলন বেশি হয়। য়
 

কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি*

*আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon